রাখাইনে ৯৯ হিন্দুকে মেরেছে আরসা: অ্যামনেস্টি

মানবাধিকার সংস্থাটি এর আগে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর মিয়ানমারের সৈন্যদের বর্বরোচিত হামলার চিত্র তুলে ধরেছিল। এবার রাখাইনের বাসিন্দা হিন্দুদের উপর রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নির্যাতনের চিত্র আনল।

অ্যামনেস্টি বলছে, রাখাইনের মধ্যে ও বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় তদন্ত করে তারা হিন্দুদের নির্বিচারে হত্যাকাণ্ডের তথ্য-প্রমাণ পেয়েছেন, যাতে আরও হিন্দু গ্রামবাসীকে অপহরণ ও আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও ঘটে থাকতে পারে।

মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অ্যামনেস্টির ক্রাইসিস রেসপন্স পরিচালক তিরানা হাসান বলেন, “আরসার কর্মকাণ্ডের নৃশংসতার দিকটি উপেক্ষা করে যাওয়া খুবই কঠিন। তাদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া যেসব ব্যক্তির সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে, তাদের ওপর এই বর্বরতার প্রভাব রয়েছে।“

আরসা নেতা আতা উল্লাহ (মাঝে)

আরসা নেতা আতা উল্লাহ (মাঝে)

রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো আরসার এই বর্বরতারও জবাবদিহি জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট সকাল ৮টার দিকে রাখাইনের মংডুর উত্তরাঞ্চলের আহ নুক খা মং সেইক গ্রামে হিন্দুদের ওপর চড়াও হয় আরসা সদস্যরা। কালো পোশাকের সশস্ত্র লোকজনের সঙ্গে সাধারণ পোশাকের স্থানীয় রোহিঙ্গা গ্রামবাসী মিলে হিন্দু নারী, পুরুষ ও শিশুদের ঘিরে ফেলে। তারা ঘর-বাড়ি লুটের পর ৫৩ জন হিন্দুকে চোখ বেঁধে গ্রামের বাইরে নিয়ে হত্যা করে।

“আরসা যোদ্ধাদের চাপে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে রাজি হওয়ায় আট নারী ও তাদের আট শিশু সন্তানকে তুলে নেওয়ার পর মুক্তি দেওয়া হয়।”

অ্যামনেস্টি বলছে, বেশ কয়েক দিন পরে আরসা যোদ্ধাদের সঙ্গে ওই হিন্দু বন্দিরা বাংলাদেশে সীমান্তে পালিয়ে আসতে বাধ্য হন। পরে তারা আবার মিয়ানমারে ফেরত যান।

বীণা বালা (২২) নামে তাদের একজন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে বলেন, “তাদের কাছে ছুরি ও বড় বড় রড ছিল। তারা আমাদের হাত ও চোখ বেঁধে রাখত। তাদের একজন বলেছিল, ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হওয়ায় আমরাও রাখাইনদের মতো এবং এখানে বাস করতে পারব না। তারা আমাদের বেশ কয়েকবার মারধর করে। এক সময় আমি তাদেরকে আমার সোনার গয়না ও টাকা দিয়ে দেই।”

বেঁচে আসা ওই আটজনের সবাই বলেছেন, হয় তারা হিন্দু আত্মীয়কে মেরে ফেলতে দেখেছেন অথবা তাদের আতর্নাদ শুনেছেন।

ফরমিলা নামের এক তরুণী বলেন, অপহৃত অন্য সাত নারীর সঙ্গে তিনি যখন তাদের সঙ্গে যাচ্ছিলেন তখন পেছন ফিরে দেখেন আরসা যোদ্ধারা অন্য নারী ও শিশুদের মেরে ফেলছে।

“আমি দেখলাম, তাদের কেউ কেউ মাথা ও চুল (নারীর) ধরে আছে এবং অন্যরা ছুরি হাতে। তারপর তারা তাদের জিহবা কেটে ফেলে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment